২১৬+ প্রতিবাদী উক্তি: যেখানে অন্যায় সেখানেই প্রতিবাদ
অন্যায় দেখে মাথা নত করা কোনো ভদ্রতা নয়, বরং তা এক ধরনের কাপুরুষতা। মেরুদণ্ড সোজা করে সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোই হলো মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয়। যখন চারপাশের নীরবতা আপনাকে দমিয়ে রাখতে চায়, তখন একটি প্রতিবাদী উক্তি হতে পারে আপনার প্রতিবাদের বারুদ। শোষণের বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে, নিজের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে সাহস জোগাতে এবং ঘুমন্ত বিবেককে জাগিয়ে তুলতেই আমাদের এই অগ্নিঝরা আয়োজন।
স্বর্ণাক্ষরে লেখা সেরা কিছু প্রতিবাদী উক্তি
নেতা যখন জনসেবক না হয়ে প্রভু হতে চায়, তখন জনতাকে রাজপথেই তাদের আসল অবস্থান বুঝিয়ে দিতে হয়। –মামুন সাদী
যদি প্রতিটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে তোমার রক্ত টগবগ করে ফোটে, তবে তুমি আমার স্বজন। – চে গুয়েভারা
বল বীর, বল উন্নত মম শির! শির নেহারি’ আমারি, নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির! – কাজী নজরুল ইসলাম
বিপ্লব কোনো আপেল নয় যে পেকে আপনিই নিচে পড়বে, ওটাকে ফেলতে হবে। – চে গুয়েভারা
স্বাধীনতা কেউ কাউকে দেয় না, এটা অর্জন করে নিতে হয়। – নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু
যেকোনো এক স্থানের অবিচার, সমস্ত স্থানের সুবিচারের জন্য হুমকি। – মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র
মানুষেরা যখন তাদের অধিকারের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়, তখন কোনো শাসকই তাদের থামিয়ে রাখতে পারে না। – নেলসন ম্যান্ডেলা
শেকলে বাঁধা পরাধীন জীবন যাপনের চেয়ে, স্বাধীনতার জন্য মৃত্যুবরণ করা অনেক বেশি সম্মানের। – বব মার্লে
স্বৈরাচারী শাসকের সবচেয়ে বড় ভয় হলো সচেতন ও প্রতিবাদী জনগণ। – থমাস জেফারসন
অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী উক্তি
অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে, তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
পৃথিবী ধ্বংস হবে খারাপ মানুষের অনাচারের জন্য নয়, বরং ভালো মানুষের নীরবতার জন্য। – আলবার্ট আইনস্টাইন
আমি সেই দিন হবো শান্ত, যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না। – কাজী নজরুল ইসলাম
যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পায়, তারা আসলে জীবিত থেকেও মৃত। – নেপোলিয়ন বোনাপার্ট
ভীরুরা তাদের মৃত্যুর আগেই বহুবার মরে, কিন্তু সাহসীরা জীবনে একবারই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে। – উইলিয়াম শেক্সপিয়ার
আইন যদি অন্যায্য হয়, তবে সেই আইন অমান্য করাটাই মানুষের কর্তব্য। – টমাস পেইন
সত্য বলা এবং অন্যায়ের প্রতিবাদ করা প্রতিটি বিপ্লবীর প্রথম কাজ। – জর্জ অরওয়েল
ইসলামিক প্রতিবাদী ক্যাপশন
ঈমান শুধু তসবিহ পড়ার নাম নয়, জালিম শাসকের সামনে হক কথা বলাও মুমিনের জন্য শ্রেষ্ঠ ইবাদত।
আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পাই না—এই বিশ্বাস যার হৃদয়ে আছে, দুনিয়ার কোনো স্বৈরাচার তাকে দমাতে পারে না।
যখন মুসলিমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে বোবা শয়তান হয়ে যায়, তখন আল্লাহর গজব আসা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
রাসুল (সা.) শিখিয়েছেন অন্যায় রুখতে, তাই অন্যায়ের সাথে আপোষ করে বেঁচে থাকা মুমিনের স্বভাব হতে পারে না।
বিচার যদি দুনিয়ায় না পাই, হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল—আকাশের আদালতের ফয়সালা চূড়ান্ত এবং ভয়াবহ।
ফেরাউনের পতন হয়েছিল, নমরুদ ধ্বংস হয়েছিল; আজকের জালিমরাও আল্লাহর পাকড়াও থেকে বাঁচতে পারবে না।
মুমিনের তলোয়ার হলো তার সত্য কথা, বাতিলের সামনে যে মাথা নোয়ায় সে প্রকৃত মুসলিম হতে পারে না।
সত্যের পথে চলা কঠিন হতে পারে, কিন্তু জান্নাতের পথটা কুসুমাস্তীর্ণ নয়, পরীক্ষার মাধ্যমেই তা অর্জন করতে হয়।
মজলুমের চোখের পানি আর শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না, এর হিসেব একদিন কড়ায়-গণ্ডায় হবেই।
রাজনৈতিক প্রতিবাদী ক্যাপশন
আমার ভোট আর আমার অধিকার—এটা কারো দয়া বা করুণা নয়, এটা আমার দেশের নাগরিক হিসেবে জন্মগত পাওনা।
উন্নয়নের চশমা খুলে দুর্নীতির দিকে তাকান, দেখবেন দেশের হাড়গোর ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।
জনগণের মুখ বন্ধ রাখতে চাইছেন? মনে রাখবেন, যেদিন জনতার বাঁধ ভাঙবে, সেদিন পালানোর পথটুকুও খুঁজে পাবেন না।
ক্ষমতার চেয়ারটা মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো, আজ আপনি আছেন, কাল অন্য কেউ থাকবে—তাই অহংকার করবেন না।
জেল-জুলুমের ভয় দেখিয়ে হয়তো রাজপথ খালি করা যায়, কিন্তু মানুষের মনের ঘৃণা আর ক্ষোভ মুছবেন কী দিয়ে?
ছাত্রসমাজ আর জনতা যখন জাগে, তখন কোনো স্বৈরাচারের গদি আর টিকতে পারে না—ইতিহাস বারবার তার প্রমাণ দিয়েছে।
গণতন্ত্র মানে শুধু একদিনের নির্বাচন নয়, গণতন্ত্র মানে ভিন্নমতকে সম্মান জানানো এবং প্রতিটি কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
শোষণের শিকল ভাঙতে হলে ঘরে বসে থাকলে চলবে না, অধিকার আদায় করে নিতে হয়, কেউ প্লেটে সাজিয়ে দিয়ে যায় না।
অন্যায়ের বিপক্ষে প্রতিবাদী স্ট্যাটাস (আইডিয়া)
অন্যায়ের সাথে আপোষ করে বেঁচে থাকার নাম জীবন নয়, ওটা দাসত্ব। মেরুদণ্ড সোজা রেখে একাই দাঁড়াবো, তবুও অন্যায়ের মিছিলে ভিড়বো না।
আমার নীরবতাকে সম্মতি ভেবো না। আগ্নেয়গিরিটাও বিস্ফোরণের আগে শান্তই থাকে।
চামচামি করে উপরে ওঠার চেয়ে, সত্য বলে নিচে পড়ে থাকাও হাজার গুণ সম্মানের।
ইতিহাস সাক্ষী, অত্যাচারী যতই শক্তিশালী হোক, চূড়ান্ত বিজয় সত্যেরই হয়।
অন্ধকারের রাজত্ব ততক্ষণই থাকে, যতক্ষণ আলোর মশাল হাতে কেউ দাঁড়িয়ে না যায়।
ক্ষমতা দেখিয়ে হয়তো আমার শরীর ভাঙতে পারবে, কিন্তু আমার প্রতিবাদের স্বরকে স্তব্ধ করতে পারবে না।
যে সমাজ সত্য বলতে ভয় পায়, সেই সমাজ পচে গেছে অনেক আগেই।
ন্যায়ের পক্ষে একা থাকাটাও গর্বের। কারণ সত্যের কোনো দলের প্রয়োজন হয় না, সত্য নিজেই একাই একশো।
মাথা নত করে বেঁচে থাকার নাম জীবন নয়, শিরদাঁড়া সোজা রেখে চোখে চোখ রেখে কথা বলার নামই মনুষ্যত্ব।
ভয় পেলে শোষক আরও মাথায় চড়ে বসবে, তাই নিজের অধিকারের জন্য গর্জে ওঠা শিখুন, কারণ অধিকার কেউ দিয়ে যায় না।
মিথ্যার দাপট যতই থাকুক, সত্যের একটা হুংকারই যথেষ্ট অন্যায়ের সাজানো প্রাসাদ চুরমার করে দিতে।
ভদ্রতা মানে অন্যায়ের সাথে আপোষ করা নয়, বরং পরিস্থিতির তোয়াক্কা না করে সত্য কথা বলাটাই আসল ব্যক্তিত্ব।
পরিবর্তন আকাশ থেকে এমনি এমনি আসে না, আঁধার কাটাতে কাউকে না কাউকে প্রথম মশালটা হাতে নিতেই হয়।
আমাদের সন্তানেরা যেন এক মেরুদণ্ডহীন প্রজন্মের গল্প না শোনে, তাই আজই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা জরুরি।
প্রতিবাদী কবিতা
পিঠ ঠেকেছে দেয়ালে আজ,
পিছু হটার নেই তো পথ,
রক্তে আমার ফুটছে দেখো,
বিপ্লবেরই শপথ। নীরব থাকা পাপ যে বড়,
অন্যায়েরই সামিল,
বজ্রকন্ঠে আওয়াজ তোলো, ভাঙো মিথ্যের সব দলিল।
চুপ মাইরা আর থাকুম কত,
পিঠে পড়ছে দাগ,
হক কথা কইতে গেলেই,
ওগো কেন এত রাগ?
লাঙল ধরা হাতটা যহন,
মুষ্টি কইরা ধরি,
শোষক তোরা পালাবি কই,
এইবার দেখব আমি।
জিহ্বা আমার কেটে দিলেও,
সত্য থামবে না,
চোখ উপড়ে ফেললে কি আর,
সূর্য ডুববে না?
কলম আমার তলোয়ার আজ,
শব্দে শানাই ধার,
মিথ্যের ঐ প্রাসাদে আজ,
হানব আমি আঘাত, বারবার।
অধিকার কেউ দেয় না সেধে,
ছিনিয়ে নিতে হয়,
ভীরুর মতো বাঁচলে পরে,
জীবন তো জীবন নয়।
শোষকের ঐ মসনদ আজ,
কাঁপবে ঝড়ের বেগে,
ঘুমন্ত সব আগ্নেয়গিরি,
উঠছে দেখো জেগে।
আমরা তো আর পুতুল পুতুল,
খেলার সামগ্রী নই,
সুতোয় বাঁধা জীবন ছেড়ে,
বাঁধন ছিঁড়েছি ওই।
চোখ রাঙানি ভয় করি না,
ভয় করি না মরণ,
ন্যায়ের জন্য লড়তে জানি,
অন্যায়েরে করতে শাসন।






