|

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রকৃতি নিয়ে ক্যাপশন: সেরা ৯৮টি পোস্ট

যখনই শরতের নীল আকাশে সাদা মেঘ ভাসে, বা আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টি মাটির বুকে মেশে, আমাদের মনে একজন মানুষের কথাই প্রথমে আসে—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি কেবল প্রকৃতির রূপকার ছিলেন না, তিনি ছিলেন প্রকৃতির আত্মা। তাঁর হাতেই বাংলার ষড়ঋতু, স্নিগ্ধ নদী আর এক চিলতে ঘাসফুলও জীবন্ত হয়ে উঠেছে, পেয়েছে এক দার্শনিক মাত্রা। এই আয়োজনটি সেই বিশ্বকবির চোখ দিয়ে প্রকৃতিকে নতুন করে ভালোবাসার এক প্রয়াস, যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রকৃতি নিয়ে ক্যাপশন-এর এক অমূল্য ভান্ডার সংকলিত হয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রকৃতি নিয়ে ক্যাপশন

বহু দিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে,
বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে,
দেখিতে গিয়াছি পর্বতমালা,
দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া,
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া,
ধানের শীষের উপরের শিশিরবিন্দু।

এই যে আকাশ আমারে ভরিল আলোয়, এই যে বাতাস আমারে দিল প্রাণ—
প্রতি নিঃশ্বাসেই তো তিনি।

জগতের এই কোলাহল আর ব্যস্ততা ছেড়ে,
প্রকৃতির এই শান্ত আশ্রয়ে এসে যেন নিজের আত্মাকে খুঁজে পেলাম।

মেঘেরা যখন আকাশের বুকে ছবি আঁকে,
তখন বুঝি, রবীন্দ্রনাথ কেন এদের নিয়ে এত কবিতা লিখেছেন।

এই নদীর স্রোতের দিকে তাকিয়ে আছি,
আর ভাবছি, জীবনটাও তো ঠিক এমনই—অবিরাম, ক্লান্তিহীন বয়ে চলা।

পথের ধারের এই ঘাসফুলটাও আজ আমার কাছে অসাধারণ,
কারণ রবিঠাকুরের চোখ দিয়েই আজ আমি পৃথিবীকে দেখছি।

তিনি শিখিয়েছেন, প্রকৃতির মাঝেই আসল মুক্তি,
এই দেয়ালের ভেতরে যা আছে, তা তো শুধু বন্দীদশা।

ভোরের এই স্নিগ্ধ আলোটা যখন গায়ে লাগে,
মনে হয় যেন ঈশ্বরের আশীর্বাদ স্পর্শ করে গেল।

শুধু ফুল নয়, এই ঝরা পাতাদের মাঝেও এক অদ্ভুত সৌন্দর্য আছে,
আছে এক সমাপ্তির গান, যা তিনি আমাদের শিখিয়েছেন।

এই প্রকৃতির কোনো ভাষা নেই,
কিন্তু তার চেয়ে বড় শিক্ষক আর কেউ নেই।

এই অসীম আকাশের নিচে দাঁড়ালে বোঝা যায়,
আমরা কত ক্ষুদ্র, অথচ আমাদের স্বপ্নগুলো কত বিশাল।

রবীন্দ্রনাথের প্রকৃতি নিয়ে কবিতা থেকে ক্যাপশন

আজি ঝরঝর মুখর বাদরদিনে, জানি নে, জানি নে কিছুতে কেন যে মন লাগে না।

মেঘের কোলে রোদ হেসেছে, বাদল গেছে টুটি। আজ আমাদের ছুটি ও ভাই, আজ আমাদের ছুটি।

আমরা বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ, আমরা গেঁথেছি শেফালিমালা।

ও আমার দেশের মাটি, তোমার ‘পরে ঠেকাই মাথা। তোমাতে বিশ্বময়ীর, তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা।

আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে, দেখতে আমি পাই নি তোমায় দেখতে আমি পাই নি।

আহা, আজি এ বসন্তে, কত ফুল ফোটে, কত বাঁশি বাজে, কত পাখি গায়।

আজ ধানের শীষে রৌদ্রছায়ায়, লুকোচুরির খেলা।

বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান, আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান।

এসো নীপবনে ছায়াবীথিতলে, এসো করো স্নান নবধারাজলে।

আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি, তুমি এই অপরূপ রূপে বাহির হলে জননী!

সীমার মাঝে, অসীম, তুমি বাজাও আপন সুর।

আলো আমার, আলো ওগো, আলোয় ভুবন ভরা।

আমার এই পথ-চাওয়াতেই আনন্দ।

রবীন্দ্র ভাবনায় প্রকৃতি নিয়ে ফেসবুক পোস্ট

রবীন্দ্রনাথের কাছে প্রকৃতি শুধু সৌন্দর্য ছিল না, ছিল এক জীবন্ত সত্তা, এক ঐশ্বরিক আশ্রয়।
তিনি আমাদের শিখিয়েছেন, এই যে ঝরা পাতা, এই যে নদীর স্রোত—এরা কেউ আমাদের থেকে আলাদা নয়।
আমরা সবাই সেই একই অসীমের অংশ।

বর্ষা মানেই আমাদের কাছে রবীন্দ্রনাথ।
তাঁর গানেই তো আমরা বৃষ্টিকে সত্যিকারের অনুভব করতে শিখি।
এই মেঘলা আকাশ, এই অবিরাম ধারা—এসব শুধু জল নয়, এ যেন আমাদের মনের গহীন কোণে লুকিয়ে থাকা না বলা অভিমান, ফেলে আসা স্মৃতির এক আর্দ্র প্রকাশ।

“সীমার মাঝে, অসীম, তুমি বাজাও আপন সুর”—
এই একটা লাইনেই হয়তো প্রকৃতির প্রতি তাঁর সমস্ত দর্শন লুকিয়ে আছে।
তিনি এক ঘাসফুলের মাঝে, এক শিশিরবিন্দুর মাঝে সেই অসীম সৃষ্টিকর্তারই স্পর্শ খুঁজে পেতেন।

শরৎকাল বাঙালির কাছে এত সুন্দর হতো না, যদি না রবীন্দ্রনাথ তাঁর লেখনী দিয়ে এই ঋতুকে অমর করে যেতেন।
এই নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর শিউলির গন্ধ মাখানো ভোর—
এসবের মাঝে তিনি একধরণের নির্লিপ্ত, পবিত্র আনন্দের সন্ধান পেয়েছিলেন।

আমরা প্রকৃতিকে দেখি শুধু চোখ দিয়ে, আর রবীন্দ্রনাথ দেখতেন তাঁর আত্মা দিয়ে।
তাই তো তাঁর কাছে একটা সাধারণ নদীও হয়ে ওঠে জীবনের প্রতীক—অবিরাম বয়ে চলা, কোনো কিছু আঁকড়ে না ধরা।

বসন্ত তাঁর কাছে ছিল এক বিপ্লব।
শীতের শুষ্কতার পর এই যে নতুন পাতা গজায়, এই যে পলাশ-শিমুলের আগুন লাগে—
এটা শুধু রঙের উৎসব নয়, এটা হলো নতুন করে জেগে ওঠার উৎসব।

তিনি আমাদের শিখিয়েছেন, প্রকৃতির সবচেয়ে বড় শিক্ষক হলো তার নীরবতা।
এই যে অসীম আকাশ, এই যে স্থির পাহাড়—এরা কোনো কথা না বলেও আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষাগুলো দিয়ে যায়।
শেখায়—কীভাবে বিশাল হতে হয়, কীভাবে ধৈর্য ধরতে হয়।

“মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে”—
এই আকুতি শুধু বেঁচে থাকার জন্য নয়,
এই আকুতি প্রকৃতির এই রূপ-রস-গন্ধকে আরও কিছুদিন উপভোগ করার জন্য।

একটা ছোট ঘাসফুলকেও তিনি উপেক্ষা করেননি।
“ক্ষুদ্র কিছুই নহে”—এই ভাবনা থেকেই তিনি প্রকৃতির প্রতিটি উপাদানের মধ্যে এক গভীর অর্থ খুঁজে পেয়েছেন।

রবীন্দ্রনাথের প্রকৃতি কেবল বাইরে নেই, সে আমাদের ভেতরেও আছে।
আমাদের মন খারাপের দিনে আকাশ যেমন মেঘলা করে,
আমাদের আনন্দের দিনে প্রকৃতিও তেমনি হেসে ওঠে।
তাঁর লেখাই আমাদের মন আর প্রকৃতিকে এক সুতোয় বেঁধে দিয়েছে।

রবীন্দ্রনাথের প্রকৃতি বিষয়ক গানের লাইন নিয়ে স্ট্যাটাস

“আকাশভরা সূর্য-তারা, বিশ্বভরা প্রাণ, তাহারি মাঝখানে আমি পেয়েছি মোর স্থান…”
এই সুবিশাল মহাবিশ্বের মাঝে নিজের ক্ষুদ্র অস্তিত্বকে খুঁজে পাওয়ার যে বিস্ময়,
সেই বিস্ময়ই আমাদের আত্মাকে প্রকৃতির সাথে একাত্ম করে দেয়।

“ওরে গৃহবাসী, খোল্ দ্বার খোল্, লাগলো যে দোল…”
ফাগুন যখন তার সমস্ত রঙ নিয়ে দরজায় কড়া নাড়ে, তখন কি আর ঘরের কোণে হিসেব কষে বসে থাকা যায়?

“আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে…”
ভোরের প্রথম সূর্যরশ্মি যখন পৃথিবীতে এসে পড়ে, তা শুধু অন্ধকার দূর করে না,
তা আমাদের ভেতরের সমস্ত জড়তাকেও পুড়িয়ে শুদ্ধ করে।

“ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে বহে কিবা মৃদু বায়…”
এই স্নিগ্ধ বাতাস, এই ফুলের মৃদু দোলুনি—প্রকৃতির এই ছোট ছোট আয়োজনের মধ্যেই
জগতের সবটুকু শান্তি আর সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে।

“তোমার খোলা হাওয়া লাগিয়ে পালে…”
এই মুক্ত আকাশের নিচে দাঁড়ালে, এই নির্মল বাতাস গায়ে মাখলে মনে হয়,
জীবনের সব ক্লান্তি, সব জঞ্জাল যেন ধুয়ে মুছে গেল।

“মেঘের কোলে রোদ হেসেছে, বাদল গেছে টুটি…”
এই ক্ষণিকের অন্ধকার, এরপরই তো রৌদ্রের সেই নির্মল হাসি।
প্রকৃতিই আমাদের শেখায়, জীবনের কোনো বিষাদই স্থায়ী নয়, আলোর রেখা ফুটবেই।

“গ্রামছাড়া ঐ রাঙা মাটির পথ আমার মন ভুলায় রে…”
পিচঢালা শহুরে পথ ছেড়ে এই মেঠো পথের ধুলোয় যে কী এক অমোঘ টান আছে, তা শুধু হৃদয় দিয়েই উপলব্ধি করা যায়।

“দিনের শেষে ঘুমের দেশে ঘোমটা-পরা ঐ ছায়া…”
সন্ধ্যা যখন নামে, তখন প্রকৃতি এক মায়াবী চাদর মুড়ি দেয়।
এই আলো-আঁধারের খেলা আমাদের শেখায়, জীবনের সব কোলাহলই একসময় শান্ত হবে।

এমন দিনে তারে বলা যায়, এমন ঘনঘোর বরিষায়।

আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে,
আমার মুক্তি ধুলায় ধুলায় ঘাসে ঘাসে।

আজি শরৎ-তপনে প্রভাত-স্বপনে কী জানি পরান কী যে চায়।

আজ জ্যোৎস্নারাতে সবাই গেছে বনে।

ঝরা পাতা গো, আমি তোমারি দলে।

রবীন্দ্রনাথের প্রকৃতি প্রেম নিয়ে উক্তি

আকাশ আমায় ভরল আলোয়, আকাশ আমি ভরব গানে। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

যখন একলা থাকি, তখন এই আকাশ এবং এই পৃথিবী আমার অন্তরঙ্গ সঙ্গী হইয়া ওঠে। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

জগতের মাঝে কত বিচিত্র তুমি হে, তুমি বিচিত্ররূপিণী। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ঘাসে ঘাসে পা ফেলেছি বনের পথে যেতে, ফুলের গন্ধে চমক লেগে উঠেছে মন মেতে। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমরা মাটির যত কাছাকাছি থাকি, ততই আমাদের আত্মার স্বাস্থ্য ভালো থাকে। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ঐ আসনতলে মাটির ’পরে লুটিয়ে রব। তোমার চরণ-ধুলায় ধুলায় ধূসর হব। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

লুব্ধ মানুষ অরণ্যকে ধ্বংস করে নিজের ক্ষতিকেই ডেকে এনেছে। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

গাছপালা, স্বচ্ছ আকাশ, মুক্ত বায়ু, নির্মল জলাশয়, উদার দৃশ্য—ইহারা বেঞ্চি এবং বোর্ড, পুঁথি এবং পরীক্ষার চেয়ে কম আবশ্যক নয়। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমার জীবনে মেঘ আসে, তবে তা বৃষ্টি বা ঝড় বয়ে আনে না, বরং আমার সূর্যাস্তের আকাশকে রাঙিয়ে দিতে আসে। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মন মোর মেঘের সঙ্গী, উড়ে চলে দিগ্‌দিগন্তের পানে। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

শীতের হাওয়ায় লাগলো নাচন আম্‌লকির এই ডালে ডালে। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *